পাতালপুরীর রক্তখাদক (৩য় বা অন্তিম পর্ব)

এই মাসের সেরা ভৌতিক গল্প-পাতালপুরীর রক্তখাদক, New Bengali horror story,notun Bangla vuter golpo,new horror story.


এসময় গুরুজী বললেন- তোমরা সবাই ভয়না পেয়ে এসো আমার সাথে, এটাই সুযোগ,
এই বলে সবাইকে নিয়ে ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলেন গুরুজি এবং দ্রুত পায়ে যেতে লাগলেন নরখাদকের দল যে দিকে গিয়েছে সে দিকে। কিছুটা পিছুপিছু যাওয়ায় পর দেখলেন রক্ত খাদকের দল একটা জায়গায় গিয়ে দ্রুত ছোট হয়ে কোথায় যেন ঢুকে পড়ছে, গুরুজী ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে দেখলেন জলাধারে শুকনো জমির ওপর একটি  ফাটল , আর সেই ফাটল দিয়েই ঢুকে পড়েছে তারা।
গ্রামবাসীরা আশ্চর্যভাবে জিজ্ঞাসা করলেন গুরুজি কে- গুরুজি এ কী করে সম্ভব এত বড় জীব কিভাবে এই ফাটল দিয়ে প্রবেশ করতে পারে?
গুরুজি বললেন- এদের দ্বারা সবই সম্ভব। এদের অনেক রূপ। তোমরা হয়তো লক্ষ্য করোনি কিন্তু আমি লক্ষ করেছি নরপিশাচগুলি এইস্থানে এসে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে, তারপরেই ফাটল দিয়ে প্রবেশ করে পাতালে। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি গ্রামে যে মানুষ গুলি মারা যাচ্ছিল তারা সকলেরই বাড়ির ভেতর দিয়ে দরজা, জানালা বন্ধ করে ঘুমিয়ে ছিল, এত বড় পিশাচের সেই দরজা জানলা না ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করা অসম্ভব'।আসলে এই নরখাদক প্রবেশ করেছিল দেওয়াল বেয়ে, দেওয়ালের মধ্যে থাকা কোন এক ফাঁক দিয়ে, ছোট গিরগিটি রূপে।
অবাক দৃষ্টিতে এসব শোনার পর ছোট কাকা বললেন - তা গুরুজি কি ওই ফাটলটি  বুঝিয়ে দিয়েছিলেন?
তান্ত্রিক - হ্যাঁ ফাটল তো তিনি বুঝিয়েছিলেন, তার আগে তিনি ওখানে মন্ত্রপূত ছাই ও গঙ্গা জল ঢেলে, গাত্র বন্ধন করে তারপর ওই ফাটলের উপর কিছুটা মাটি দিয়ে,সেখানে একটি অশ্বত্থ বৃক্ষের চারা রোপণ করেছিলেন!
মোড়ল মশাই প্রশ্ন করলেন- আচ্ছা ওই পিচাশের দল ও অঘোরী রা গুরুজি ও গ্রামবাসীদের দেখতে পাইনি কেন?
তান্ত্রিক - গুরুজি জঙ্গলে প্রবেশের পর পর  মাটিতে বসে প্রথম যে মন্ত্র পাঠ টি করছিলেন, তা ছিল  অদৃশ্য করার মন্ত্র, যা পাঠ করে তিনি নিজেকে ও গ্রামবাসীকে অদৃশ্য করেছিলেন অঘোরী কাপালিক ও  নরপিশাচের দৃষ্টি থেকে।

গল্প শুনতে শুনতে যে কখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমে এসেছে তা কেউ টের পায়নি, যদিও তারা গন্তব্যে ফিরে এসেছে। গরুর গাড়ি এসে থামলো মোড়ল মশাই এর বাড়ির সামনে। সবাই নেমে পড়লেন গাড়ি থেকে।
তান্ত্রিক বাবাকে প্রনাম করে বিদায় নিলেন ছোট কাকা ।মোরল মশাই গরুর গাড়ির  মালিক হেমান মুন্ডাকে বললেন, তাদের গোয়াল ঘর থেকে খড় নিয়ে এসে যেন গরুগুলিকে খেতে দেয়।বেচারারা অনেক ক্ষন কিছু খায়নি!
তান্ত্রিক বললেন- হেমান কিন্তু আজকের দিনটা এখানেই থাকবে। গোয়ালঘরে একটু ব্যবস্থা করে দিলেই হবে।
মোড়ল মশাই- আরে না,না গোয়াল ঘরে কেন আমাদের ঘরেই ও থাকবে আর  আপনিও।
তান্ত্রিক-আমি, না না আমি বাড়িতে থাকি না, কিছুটা অদূরে একটি বড় বটবৃক্ষ দেখিয়ে বললেন- ওই যে দেখছো বটবৃক্ষ, আমি ওখানেই থাকবো। আমাকে বরং দুটো খৈ আর বাতাস দিয়ে যাও!
তান্ত্রিকের কথা মতন কাজ করলেন মোড়ল মশাই।
পরদিন সকালে ছোট কাকা, অনিমেষ ও শুভজিৎ এলেন মোরল মশাইয়ের বাড়িতে। দেখলেন মোড়ল মশাই সেই মাত্র ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলছেন।
ওনাকে দেখে ছোট কাকা বললেন- কি মশাই কাল রাত্রে কেমন ঘুম হল?
এই কথা শুনে মোরল মশাইয়ের হঠাৎই মনে পড়ে গেল কাল রাতের কথা।  উনি সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির উঠোন থেকে নেমে ছুটতে লাগলে সেই বট গাছটার দিকে।
আশ্চর্য হয়ে পেছনে পেছনে দৌড়ালেন ওরা তিনজনও।
ছোট কাকা ছুটতে ছুটতে বললেন- কি হয়েছে? আরে মশাই ছুটছেন কেন, কি হয়েছে বলবেন তো?
অবশেষে বটতলায় এসে দেখে, তান্ত্রিক তখন ধ্যানে মগ্ন হয়ে বসে আছেন‌। চোখ না খুলেই তান্ত্রিক মোরল মশাই কে উদ্দেশ্য করে বললেন- কি,কাল রাতে খুব ভয় পেয়েছিলে তাই না? হাহাহাহাহা.
এই বলে হা হা করে হাসতে লাগলেন তান্ত্রিক।
মোড়ল মশাই বললেন- বাবা কাল কি হয়েছিল?  কাল মাঝরাতে হঠাৎ এক বিকট চিৎকারে আমার ঘুম ভেঙে যায়। সেই চিৎকার শুনে আমার গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। তারপরে কার যেন ভয়ঙ্কর আর্তনাদ শুনি, তখনি বিশালাকার কিছু যেন ধপ করে মাটিতে পড়ে যাওয়ার শব্দ পাই আমি আপনার কথা ভেবে দরজা খুলে বাইরে বের হচ্ছিলাম কিন্তু ঠিক সেই সময় দেখলাম কোথা থেকে ছুটে এসে হেমান আমাকে বাড়ি থেকে বের না হতে অনুরোধ করলেন।আর বললেন, আমি যেনো দরজা বন্ধ করে ঘরেতেই থাকি আর ভয় না পাই। বাবাজির কিচ্ছু হবে না,এই বলে তিনি আবার চলে গেলেন গোয়াল ঘরে । তা কি হয়েছিল বাবা কাল রাতে?
ওরাও তিনজন তাকিয়ে আছে জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে! তান্ত্রিক এবার চোখ খুলে বললেন- কাল এসেছিল সেই রক্ত পিপাসু নরকের কীট টা। তবে ও জানতো না যে, এখানে আমি আছি ।
মোড়ল মশাই এর বাড়ির কিছুটা পাশেই একটি টালির চালার বাড়ি দেখিয়ে বললেন- নরঘাতকটা এসেছিল ওই বাড়ির কারো সর্বনাশ করতে। কাল মাঝরাতে তখন আমি ছিলাম নিদ্রায়। হঠাৎ চোখ খুলতে দেখি নরপিচাশ টা এখানে এসে দাঁড়িয়ে, ওই বাড়িটার দিকে তাকিয়ে চাপা গর্জন করছে। তারপর দেখি পিশাচ টা ধীরে ধীরে ছোট আকার ধারণ করছে, তখনই আমি একটুও দেরি না করে লাফিয়ে পড়ি পিশাচ তার ওপর,টিপে ধরি ওর গলা। এরূপ আক্রমণে হকচকিয়ে গিয়ে পিশাচ টা পড়ে যায় মাটির উপর। আমি তখনো টিপে ধরে আছি ওর গলা,সাথে করতে থাকি গুরুর শেখানো মন্ত্র পাঠ। এরপর তার প্রতি আক্রমণে আমার হাত থেকে ছিটকে যায় সে। তখন সে তার আসল রূপ ধারণ করতে থাকে। প্রায় দু মানুষ লম্বা এক বিশাল সরিসৃপ, গোটা শরীরে কালো লোমে ঢাকা, কিন্তু সে আমাকে আক্রমণ করার আগেই আমি আবারও তার সামনে গিয়ে তার টুঁটি টা টিপে ধরে পুনরায় মন্ত্র পাঠ করতে থাকি। তখন সে মাটিতে পড়ে আর্তনাদ করে গোঁঙাতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আর গড়িয়ে পড়ে ওই খালের ধারে। দৈব মন্ত্র ওরা বেশিক্ষণ সহ্য করতে পারেনা।
এই কথা শুনে সবাই গিয়ে দাঁড়ায় ওই খালের ধারে, বিশাল এক লোমশ সরীসৃপ খালের জলে মুখ গুজে পড়ে আছে দেখে, সবার ভয়ে গা শিউরে ওঠে। তাকে ভালো করে দেখার জন্য খালের ধার দিয়ে নামতে চেষ্টা করে শুভজিৎ কিন্তু তাকে বাধা দেয় ছোট কাকা।
ছোট কাকা বলেন- কোন দরকার নেই  ওখানে নামার,এখান থেকেই দেখো তোমরা।
এই খবর প্রায় হাওয়ার গতির থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল এই গ্রামে ও আশপাশের গ্রামে। দলে দলে লোক দেখতে আসে এ দৃশ্য আর সকলেই তান্তিক বাবার চরণে মাথা ঠোকেন। যারা পরিবারের লোকজন হারিয়েছেন তারা তান্ত্রিকের পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। তান্ত্রিক কোনমতে সকলকে শান্ত করিয়ে সকল গ্ৰামবাসীর উদ্দ্যেশ্য তিনি বলেন- এই রক্তখাদকের সংখ্যা কিন্তু একটি নয়, অসংখ্য পিশাচের জন্ম হয়েছে ওই পাতালের ভিতরে, তাই আমাদের খুঁজে বের করতে হবে সেই অভিশপ্ত স্থান যেখান থেকে উঠে আসছে এই নরকের কীটের। এখন কিছুজন আমার সাথে চলো আর বাকিরা বাড়ি ফিরে যাও।
সেইমতো গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে তান্ত্রিক এগিয়ে চললেন তিলজলা গ্ৰামের একেবারে শেষ প্রান্তে। গ্রামের শেষপ্রান্তটি একবারে ঘন জঙ্গল দ্বারা পরিবেষ্টিত, ঝোপঝাড় পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন সকলে, সামনে যাচ্ছেন তান্ত্রিক, মোড়ল মশাই তার পেছনে ছোট কাকা,অনিমেষ,শুভজিৎ ও আরো বেশ কিছু লোকজন। মোড়ল মশাই এবার দাঁড়িয়ে গিয়ে সামনের একটি পরিত্যক্ত জলা দেখিয়ে বললেন ওই জলা পর্যন্ত আমাদের গ্রাম। তান্ত্রিক তখন চারদিক তাকাতে লাগলেন তারপর কিছুটা ডান দিকে হেঁটে গিয়ে দেখলেন একটি বিরাট অসত্য গাছ ভেঙে পড়ে আছে। সামনে গিয়ে দেখেন গাছটি গোড়া থেকে উপড়ে গেছে, ঠিক যেন কোন বড় ঝড় গাছটি উপড়ে ফেলেছে। বাকিরা তখন এসে দাঁড়িয়েছে সেই গাছটির সামনে। মোড়ল মশাই ও ছোটকাকার বুঝতে আর বাকী রইল না শিবনাথ তান্ত্রিক এর বসানো এটাই সেই গাছ, আরো পষ্ট হল এই দেখে যে, গাছের গোড়ায় এক বিশাল গর্ত। তান্ত্রিক নির্দেশ দিলেন সকল গ্রামবাসীকে খবর দিতে যে, তারা যেন তাদের সাধ্যমতো কেরোসিন, শুকনো কাঠ,খড় ও শুকনো গোবর এই স্থানে নিয়ে আসে। সেই কথামতো গ্রাম ও গ্রামের বাইরের মানুষজন এই সব রকমের দাহ্য পদার্থ নিয়ে আসে
তান্ত্রিক বললেন- এখন সবাই বাড়ি ফিরে যাও, ঠিক বিকেলের পর এই স্থানে উপস্থিত হতে হবে সকলকে।এখন আমরাও ফিরে যাব।
বাড়ির পথে রওনা দিতে দিতে মোড়ল মশাই তান্ত্রিক কে প্রশ্ন করলেন- আচ্ছা বাবা, কাল রাতে আপনার সামনে থেকেও আপনাকে দেখতে পাইনি কেন ওই নরপিশাচটা?
তান্ত্রিক হেসে বললেন - কাল আমি নিজেকে অদৃশ্য রেখে ছিলাম। আমার মনে হয়েছিল এরকম একটা কিছু ঘটতে পারে, সেজন্য ব্যাটা টের পাইনি আমার অস্তিত্ব।হা হা হা হা.....
বিকেল গড়াতেই জলার ধারে প্রচুর মানুষের ভীড় জমতে থাকে। তাদের কারও হাতে দাঁ, আবার কারও হাতে কাঠারি, যখন সম্পূর্ণ গ্রামের লোক সেখানে উপস্থিত হয়, তখন সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করে তান্ত্রিক মন্ত্র পড়ে গাত্র বন্ধন করে দেন এবং সকলকে সাবধান করে দেন কেউ যেন তার অনুমতি ছাড়া এই গণ্ডি থেকে বের না হয়। শীতের সময় সূর্য তারাতারি অস্ত যায়, এখন সূর্য পশ্চিমে ঢলতে শুরু করেছে, তান্ত্রিক ছোট কাকা ও মোরল মশাইকে নির্দেশ দিলেন ওই বিশাল গর্তের চারধারে যে স্তূপাকার কাঠ ও খড় দিয়ে সাজানো আছে, তাতে যেন কেরোসিন ঢেলে দেয়। ওনার কথামতোই কাজ হল। কিছুক্ষণের মধ্যেই এবার তিনি যজ্ঞে বসলেন আর ছোট কাকা ও মোরল মশাইকে গন্ডির ভেতর প্রবেশ করতে বললেন কিছুক্ষণ পর তান্ত্রিক যজ্ঞের আগুনে একটি কাঠ পুড়িয়ে সেই কাঠ ছুড়ে দিলেন স্তূপাকার কাঠগুলির মাঝে সেই বিশালাকার গহবর এ, তারপরই ঘটল এক মর্মান্তিক ঘটনা। আগুন গর্তের ভেতর প্রবেশ করতেই ভেতর থেকে আকাশ,বাতাস চৌচির করা গর্জন শোনা গেল। তার পরই দেখা গেল দলে দলে উঠে আসছে সেই নরকের কীটেরা,যেন মনে হল দীর্ঘ দিনের কোন সুপ্ত লাভা পাতালের গহবর চিরে ছুটে যেতে চাইছে দিক বে দিক। এমন অবস্থায় তৎক্ষণাৎ তান্ত্রিক আরো একটি কাঠ নিয়ে, তাতে আগুন লাগিয়ে সেটা ফেলে দিলেন স্তূপাকার কাঠ ও খড়ের ওপর, সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল পিশাচের দল সেই স্তূপ পেরিয়ে আসার চেষ্টা করায়,তাদের লোমশ শরীরে আগুন ধরতে শুরু করে,তখন তারা আরও হিংস হয়ে, বাহিরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে, কিন্তু সারা শরীর আগুনে জ্বলে,তারা একের পর এক পড়তে থাকে সেই বিশাল গহ্বরের কোন এক অতলে।আর ওদের দম ফাটানো ভয়ানক আর্তনাদ দিকবেদিক ছড়িয়ে পড়ে। গোটা গ্রামের মানুষ এই দেখে রীতিমতো ভীত, স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। এ কি ঘটছে এখানে,এ দৃশ্যতো তারা কখনো স্বপ্নেতেও দেখেনি। হঠাৎ ই দেখা গেল কিছু মানুষ সেখানেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন, বাকিরা ঠকঠক করে কাঁপছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কাঠের জ্বলন্ত স্তূপের ওপর থেকে ঝাঁপিয়ে এসে পড়ে এক নরপিশাচ, শরীরের সম্পূর্ণ লোম তার পুড়ে গিয়েছে, বেরিয়ে এসেছে পুড়ে যাওয়া অংশের দগদগে ক্ষত, আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বল জ্বল করছে তার বীভৎস মুখ। লালা ঝরছে অনবরত মুখ দিয়ে,আর সাথে গর্জন করতে করতে  হঠাৎ ই ঝাঁপ দেয়, সেই গন্ডিতে থাকা মানুষ গুলির দিকে, কিন্তু বাধা পেয়ে থকমে দাড়িয়ে পড়ে সেই নরপিশাচ। কিন্তু ঘটনাক্রমে এ দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে সেই গণ্ডির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোড়ল মশাই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান মাটিতে, আর তার মাথাটি বেরিয়ে পড়ে গণ্ডির বাইরে। সঙ্গে সঙ্গে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট কাকা ও শুভজিৎ তাকে ধরে তুলতে গেলে শুধুমাত্র কিছু সেকেন্ডের ব্যবধানে নরপিশাচটি মোরল মশাই এর মাথা কামড়ে ধরে এক টানে ছিড়ে ফেলে ধর থেকে।  সঙ্গে সঙ্গে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা অনিমেষ পাশের লোকটির হাতে থাকা দাঁ টি দিয়ে সজোরে আঘাত করে পিশাচটির গর্দানে, তখনই গর্দানটি  কেটে পড়ে  মাটিতে।

এরপর প্রায় দুমাস হয়ে গেল, তান্ত্রিক ফিরে গেছেন সেই পরিত্যক্ত দিঘির পাড়ে, অনিমেষ ও শুভজিৎ সেই দোকানদারের টর্চ ফেরৎ দিয়ে ফিরে এসেছে শহরে। তারপর থেকে আর খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায় না তিলজলা গ্ৰামের মর্মান্তিক ঘটনার কথা।
অনিমেষ ফোনটা হাতে নিয়ে ফোন করলেন তার ছোট কাকাকে। ওপার থেকে শোনা গেল ছোট কাকার গলায়- কে?
অনিমেষ বলে-ছোট কাকা আমি।আমার একটা কথা জানার ছিল?
ছোট কাকা- কি বল?
অনিমেষ- তোমাদের ওই তান্ত্রিক এর নামটা যেন কি ছিল?
ফোনের ওপার থেকে ছোট কাকা বললেন -              রঘুনাথ তান্ত্রিক...।
                                  (সমাপ্ত)

                                          লেখক- অভিজিৎ দেয়াশী


গল্পটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানান।