নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ আজ ৭ জুলাই। মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন। প্রাক্তন থেকে বর্তমান ক্রিকেটাররা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে মধ্যরাত থেকেই শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাচ্ছেন। যদিও যুবরাজ সিংয়ের অবস্থান উস্কে দিচ্ছে পুরানো বিতর্ক। মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে যুবরাজ সিংয়ের বন্ধুত্বের কথা ভারতীয় ক্রিকেটে অজানা নয়। দুজনেই কেরিয়ারের প্রথম দিকে ছিলেন অভিন্নহৃদয় বন্ধু। মাঠে বহু ম্যাচ একসঙ্গে জিতিয়েছেন ধোনি-যুবি। দুজনের আগ্রাসী ব্যাটিং, ফিটনেস বাকিদের কাছে ছিল অনুকরণীয়। বল হাতে কামাল দেখাতেন যুবরাজ, ধোনি উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে। এমনকী ধোনি অধিনায়ক হওয়ার পরও দুজনের সম্পর্কের অটুট বন্ধন মাঠ, মাঠের বাইরে সকলের কাছেই ছিল দৃষ্টিনন্দন।
দীপিকা ফ্যাক্টর বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে ধোনি ও যুবরাজ দুজনেরই সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। অনেক সাংবাদিকের অভিজ্ঞতাই রয়েছে, ভারতীয় দলের টিম হোটেলে রাতেও ঢুকতে দেখা যেত দীপিকাকে। ধোনি ও দীপিকা কখনও নিজেদের প্রেমের সম্পর্কের কথাকে বারবার গুঞ্জন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে এমনটাও শোনা যায়, দীপিকার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেতে নাকি ধোনি ফারহা খান ও শাহরুখ খানকেও অনুরোধ করেছিলেন। মাথার লম্বা চুল দীপিকার কথাতেই ধোনি কাটান বলেও শোনা গিয়েছিল। দীপিকা যে তাঁর প্রিয় অভিনেত্রী সে কথা ধোনি স্বীকার করতেন। তবে দীপিকার কথাতে চুল কাটিয়ে ফেলার কথা অস্বীকার করে ধোনি বলেছিলেন, নতুন লুকের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। তবে শোনা যায়, ধোনি ও দীপিকার মাঝখানে চলে আসেন যুবরাজ সিং। যুবির সঙ্গেও দীপিকাকে অনেক জায়গায় দেখা গিয়েছে। একসঙ্গে সময় কাটাতেন। রণবীর কাপুরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে দীপিকার সঙ্গে যুবির সম্পর্ক নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। এমনটাও শোনা যায় বন্ধু যুবরাজের জন্যই দীপিকার কাছ থেকে সরে যান ধোনি।
সম্পর্কের অবনতি ভারত অধিনায়ক হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনি যখন সাফল্যের মধ্যগগনে তখনই ধোনির সঙ্গে যুবির দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০১১ বিশ্বকাপের পর যুবির ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সার জয় করে যুবরাজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ফেরেন। কিন্তু চলার পথ মসৃণ হয়নি। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল অবধি একদিনের আন্তর্জাতিকে যুবরাজের না সুযোগ পাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে আসে ধোনির কলকাঠি নাড়ানোর অভিযোগ। ধোনির অধিনায়কত্ব যাওয়ার পর ফের কামব্যাক করেন যুবি। বিরাট কোহলির সঙ্গে অবশ্য যুবরাজের বরাবরই ভালো সম্পর্ক।
ধোনির প্রতি ক্ষোভ শুধু যুবরাজ নন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ ও সচিন তেন্ডুলকরের ক্রিকেটজীবনও যে ধোনির জন্যই দীর্ঘায়িত হয়নি সে কথা আজও আলোচনায় উঠে আসে বারবার। ধোনির ইচ্ছাকে মান্যতা দিতেই ফ্যাব ফোরকে একে একে বিদায় নিতে হয় ভারতীয় ক্রিকেট থেকে। ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক সাফল্য এনে দিলেও ধোনির ক্রিকেট-রাজনীতি নিয়ে সরব হন তাঁর সমালোচকরাও। শ্রীনি-ধোনিকে খুশি করতেই অনেক অপ্রিয় সিদ্ধান্তও নিয়েছেন নির্বাচকরা। টুইট নেই যুবরাজের যুবরাজের ক্রিকেট কেরিয়ার খারাপ করেছেন ধোনিই, বারবার এমনটা অভিযোগ করেছেন যুবির পিতা, প্রয়াত যোগরাজ সিং। যুবরাজ নিজে অবশ্য ধোনির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেননি প্রকাশ্যে। তবে অবসর নেওয়ার সময় ধোনি বা যুবরাজ কেউ একের অন্যের নাম মুখে নেননি। তবে একদা অভিন্নহৃদয় বন্ধুর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি নজর এড়ায়নি ক্রিকেট অনুরাগীদের। আজও ধোনির জন্মদিনে দুপুর পর্যন্ত বা এই প্রতিবেদন লেখা অবধি টুইট নেই যুবরাজের। ফলে দুজনের সম্পর্ক নিয়ে ফের জল্পনা শুরু হয়েছে। পিভি সিন্ধুর জন্মদিনে সকাল ১১টা ৪৯ মিনিটে টুইট করে শুভেচ্ছা জানানো যুবরাজ আজ দিলীপ কুমারকে নিয়ে শোকবার্তা দিলেও ধোনির জন্মদিন নিয়ে এখনও নীরবই রয়েছেন। এমনকী হরভজন সিং বা গৌতম গম্ভীরও টুইট করেননি এখনও পর্যন্ত।