সঙ্গীত এর জগতে প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক সংঘর্ষ করতে হয় এই তরুন শিল্পীকে। যদিও অরিজিৎ এর পরিবার, সঙ্গীত জগতের সাথে অতপ্রতভাবে যুক্ত ছিল। তবুও সমস্ত ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন একাই। নমস্কার বন্ধুরা আমি অভিজিৎ, আর আপনারা দেখছেন চ্যানেল অভি এন্টারটেন,এই প্রতিবেদন এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে, আপনার প্রিয় শিল্পী অরিজিৎ সিং এর জীবন সংঘর্ষ থেকে সফলতার চরম সিমায় পৌছনোর অজানা কাহিনী।

Arijit Singh lifestyle, Arijit Singh biography, Arijit Singh wife, Arijit Singh photo, Arijit Singh new song, Arijit Singh hit songs,
অরিজিৎ সিং

কোথায় বড় হয়েছিলেন অরিজিৎ?

অরিজিৎ সিং জন্মেছিলেন ১৯৮৭ সালে ২৫শে এপ্রিল পশ্চিম বঙ্গের মুরসিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ এ । অরিজিৎ এর বাবা পাঞ্জাবী হলেও মা ছিলেন বাঙালি। অরিজিৎ এর বাবা একটি জীবন বীমা কোম্পানি তে কাজ করতেন,আর মা ছিলেন হাউস ওয়াইফ,এর সাথে সাথেই তিনি সঙ্গীত চর্চা ও করতেন এবং ভালো তবলাও বাজাতেন। শুধু অরিজিৎ সিং এর মা নন,ওনার পরিবারের অনেকেই,যেমন দিদা,মামীও মাসি সকলেই ছিলেন সঙ্গীত এর সাথে যুক্ত। হয়তো এই কারনেই অরিজিৎ এর গানের প্রতি টান জন্মলগ্ন থেকেই।

Arijit Singh lifestyle, Arijit Singh biography, Arijit Singh wife, Arijit Singh photo, Arijit Singh new song, Arijit Singh hit songs,
অরিজিৎ সিং ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী

সঙ্গীত এর প্রতি  অরিজিৎ এর প্রেম তার বাবা ও মা কে ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট করে,তাই তারা অরিজিৎ কে সঙ্গীত এর প্রফেশনাল ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সেই সময় ই অরিজিৎ হাজারি ব্রাদার্স এর কাছ ট্রেনিং নেওয়া শুরু করেন, ওস্তাদ রাজেন্দ্র প্রসাদ হাজারীর কাছে ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিক শেখেন, ওস্তাদ ধীরেন্দ্র প্রসাদ হাজারীর থেকে তবলা শেখেন ও ওস্তাদ বীরেন্দ্র প্রসাদ হাজারী তাকে পপ মিউজিক শেখান। ভালো ট্রেনিং হওয়ার কারণে অরিজিৎ সংগীতে বেশ পারদর্শী হয়ে ওঠেন। এবার অরিজিতের প্রয়োজন ছিল একটি সুযোগের, যে সুযোগ তাকে অনেক দূরে নিয়ে যাবে। সাল ২০০৫ এ একটি রিয়ালিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করতে নিজের শহর ছেড়ে মুম্বাই চলে আসে অরিজিৎ।এই শো টি ছিল সনি টিভির ফ্রেম গুরুকুল। এই শোয়ের একজন জার্জ হিসেবে ছিলেন শংকর মহাদেবান, আর এই কারনেই অরিজিৎ এই শোয়ে অংশগ্রহণে আগ্রহী হয়ে পড়ে। কিছু রাউন্ড অডিশনের পর অরিজিৎ  শো এ সিলেক্ট হয়ে যান। অরিজিৎ যথারীতি নিজের পারফর্মেন্স দেখানো শুরু করেন সেখানে উনার ভয়েস সকলের খুব পছন্দ হলেও অনেকে মনে করেছিলেন অর্ডির হয়তো টপ রানারদের মধ্যে জায়গা করে নেবেন। কিন্তু ভোটিং কম পাওয়ার কারণে অরিজিতের জায়গা ছয় নম্বরে স্থান পায়। যার ফলে টপ ফাইভ এ জায়গা করতে পারেননি তিনি। শো থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারনে তিনি খুব ভেঙে পড়েন এবং তার মনে হয়েছিল এত বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করে কি লাভ যদি মানুষ আমার কন্ঠ পছন্দ ই না করে!
ফ্রেমগুলোকুল থেকে বাদ পড়লেও তার গানের গলা খুবই পছন্দ হয় শংকর মহাদেবানের। শংকর মহাদেবন বলেন এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার কারণে এই নয় যে সব শেষ, এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। এবং তখন আরো একটি কথা বলেছিলেন তিনি, বলেছিলেন- তিনিই তাকে কাজ দেবেন। এই শো শেষ হবার কিছুদিন পর শংকর মহাদেবন তার কথামতো অরিজিৎ সিংকে হাই স্কুল মিউজিকাল টু অ্যালবামে (আলফর ওয়ান আজা নাচলে) গানে সুযোগ দেন। যদিও অ্যালবামটি সেভাবে চলেনি, তবুও অরিজিৎ ভেঙে পড়েন নি বরং তিনি আরও এগিয়ে যাওয়ার সাহস পান। ফেম গুরুকুলে থাকাকালীন সঞ্জয় লীলা বানশালীর নজরে এসেছিলেন অরিজিৎ। এ জন্য তিনি তার ছবি শাওয়ারিয়াতে , ইউ সাপনা গানটি রেকর্ড করান, কিন্তু পরে ছবি স্কিপ্ট চেঞ্জ হওয়ায় গানটি ছবি থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। এরকমই টিপস কোম্পানির মালিক হেড কুমার তহরানীও একটি গানের সুযোগ দেন অরিজিৎ কে,যদিও সেটি ছিল অ্যালবামের, কিন্তু ভাগ্যবসত তো সেই গানটিও রিলিজ হয়নি। কিছু পার্সোনাল কারণের জন্য এই অ্যালবামটি লঞ্চ করা হয়নি। এই সময়টা অরিজিতের খুবই খারাপ ছিল কারণ ভাগ্য তার সাথে ছিল না। বহু মানুষ এটা ভাবেন যে হয়তো ভাগ্য ই খারাপ হয় । তারা এটা জানেনা ভাগ্য খারাপ হয় না, খারাপ হয় সময়, আর সময় হল এমন একটি বিষয় যেটি খারাপ হোক বা ভালো এক না একদিন ঠিকই পরিবর্তন হয়।অরিজিৎ এরপর আরও একটি রিয়ালিটি শো ( ১০কে ১০ লে গায়ে দিল) তে অংশ গ্ৰহন করেন।এই শো তে অরিজিৎ এর পারফর্মেন্স ছিল দারুন, যতদিন শো চলেছিল ততদিন অরিজিৎ সকলের থেকে বেশি প্রশংসিত হয়েছিলেন, অবশেষে যখন এই শোয়ে বিজেতা ঘোষণা করা হয়,তখন সকলে দেখে সেই শোয়ের বিজেতা আর কেউ নয়,সে ছিল অরিজিৎ সিং।আর এই শোয়ে জেতার কারনে , কিছু দিনের মধ্যেই এক জনপ্রিয় মিউজিক কোম্পানি তে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান অরিজিৎ সিং। শো জেতা ও মিউজিক কোম্পানি তে কাজ করার পরেও তাকে অনেক বাঁধা র মধ্যে পড়তে হয়। অরিজিৎ যেহেতু ইন্ডাস্ট্রি তে নতুন, এবং সেই সময় অনেক বড় বড় সিঙ্গার রাও কাজ পাচ্ছিলেন না,তাই অরিজিৎ নিজেও বুঝতে পারেন, এখন সে কাজ পাবেনা। কিন্তু বিনা কাজে ও ইনকামে মুম্বাইয়ের মতো শহরে জীবনধারণ করা সম্ভব নয়,তাই সে ঠিক করেন,এখন থেকে গান প্রডিউস করবেন, এইজন্যই সে হয়ে যান মিউজিক প্রডিউসার। ফলে বেশকিছু মিউজিক ডিরেক্টরের সাথে সে কাজ শুরু করেন,তার মধ্যে ছিলেন প্রীতম চক্রবর্তী,শঙ্কার এয়সান লয়,বিশাল শেখার এর মতো বড় বড় মিউজিক ডাইরেক্টর। এনাদের সাথে কাজ করার ফলে সংগীত জগতে র আরও অনেক কিছু শেখেন, যা অরিজিৎ সিং এর কাছে অজানা ছিল। সাল 2010 এ মিউজিক ডিরেক্টর প্রীতম সোলে- 3D ছবির মিউজিক ডিরেক্ট করছিলেন। অরিজিৎ যেহেতু মিউজিক প্রোগ্রামার ছিলেন তিনি প্রিতমের গানের রাফকাট সিঙ্গিং করতেন। অরিজিৎ এর গলা এতটাই সুরেলা ছিল যে প্রীতম ভেবেছিলেন যে কিছু গান না হয় অরিজিৎকে দিয়েই গাওয়ানো যাক। গানগুলি রিলিজ হওয়ার পর প্রীতম দেখলেন যে অরিজিৎকে দিয়ে তার গান গাওয়ানোর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। অরিজিতের ওই গানগুলির খুব ভালো প্রভাব পড়ার ফলে আরো অনেক মিউজিক ডিরেক্টর, ডিরেক্টর ও প্রডিউসার তার সাথে কাজ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অরিজিৎ সিং এর বলিউডে ব্যাকগ্রাউন মিউজিক ক্যারিয়ার শুরু হয় মার্ডার টু ছবির (ফির মোহাব্বত) গান দিয়ে। আপনাদের শুনে হয়তো আশ্চর্য লাগবে ফির মহাব্বাত গানটি ২০০৯ সালে রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু ওই গানের যোগ্য ছবি না পাওয়ার কারণে গানটি দু'বছর পেন্ডিং এ পড়ে থাকে। কিন্তু যখন ২০১২ সালে এই গানটি রিলিজ হয় তখন শ্রোতাদের এই গানটি খুবই পছন্দ হয়। অরিজিতের প্রথম বলিউড গানই ছিল সুপার হিট। অরিজিৎ সিং এর দ্বিতীয় সুপারহিট গান রিলিজ হয় 2012 সালেই এজেন্ট বিনোদ ছবিতে। এরপর 2013 সালে আশিকি টু ছবির( কিউকি তুম হি হো) গানে নিজের কন্ঠ দেন। আর এই গানটি অরিজিতের জীবন পাল্টে দেয়। এই গানটি অরিজিতের ফ্যান ফলোয়িং ও গানের ডিমান্ড এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে, এরপর থেকে প্রচুর গানের অফার আসতে থাকে। এই গানটি শুধু 2013 সালে সবথেকে বেশি শোনা গান ই নয় বরং এই গানটি অল টাইম হিট সং হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। তুম হি হো গানের জন্য অরিজিৎ সিং কে বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড তো পেয়েছিলেন ই এবং তার সাথে আরো বহু অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। এরপর থেকেই অরিজিতের ও সুপার হিট গানের যাত্রা শুরু হয়ে যায়। এমনকি অরিজিত সিং এর গানে প্রভাবিত হয়েও বহু গায়ক তার মতন করে গান গাইতে শুরু করেন। অরিজিৎ সিং এর সুপার হিট গানের লিস্ট অনেকটাই বড় তবে  দেখে নেওয়া যাক কোন গানগুলি তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে গেছে। তা হল- মার্ডার টু এর ফির মোহাব্বত, এজেন্ট বিনোদের রাপ্তা আশিকি টু এর তুম হি হো, এ জাবানি হে দিওয়ানি ছবির দিল্লি ওয়ালি গালফ্রেন্ড, কাবিরা, ইলাহি, বালাম পিচকারী, ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো ছবির মে রং শরবাতোকা, আর রাজকুমার ছবির ধোকাধারী, জ্যাকপট ছবির কভি জো বাদাল বারসে, ক্রিয়েচার ছবির মহব্বত বারসা দেনা তু, এই গানগুলি ছিল তার প্রথম দিকের সুপার হিট গান, যার মধ্যে তার নিজের প্রিয় গান ছিল কাভি জো বাদাল বারসে। আশিকি টু এর পর অরিজিৎ এত গানের অফার পাচ্ছিলেন যে এক একদিনে প্রায় ১৬টার মত গান ও রেকর্ড করেছিলেন। উনার কাছে সময় এত কম ছিল যে ঠিকমতো শুতে পারতেন না। একেই বলে জীবনের আসল সাফল্য। অরিজিৎ ২০১২ থেকে এখনো পর্যন্ত প্রায় সাতশোর ও বেশি গান গেয়ে ফেলেছেন।
অরিজিৎ সিং এর পার্সোনাল লাইফ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য আছে,যা আরো বেশি ইন্টারেস্টিং। আপনাদের মধ্যে অনেকে হয়তো জানেন না যে অরিজিৎ সিং এর দুটি বিয়ে। অনেকেরই ধারণা অরিজিৎ সিং এর প্রথম পক্ষ স্ত্রী রূপরেখা বন্দ্যোপাধ্যায়।রিয়েলিটি শো ফিল্ম গুরুকুলে থাকা কালীন নাকি তাদের মধ্যে প্রেম বিনিময় হয়, এরপর 2013 সালে নাকি তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। যদিও কোন এক অজ্ঞাত কারণে তাদের বিয়ে ভেঙে যায় এক বছরের মধ্যে। এরপর অরিজিৎ সিং ২০১৪ সালে তার ছোটবেলার বন্ধু কোয়েল রায় কে বিয়ে করেন। অরিজিতের মতন কোয়েলের ও আগে একটি বিয়ে ছিল এবং তারও বিবাহিত জীবন সুখর হয়নি, অরিজিতের দ্বিতীয় স্ত্রীর একটি সন্তানও আছে যে এখন এনাদের সাথেই থাকেন। অরিজিৎ সিং দ্বিতীয় বিয়েটা চুপি চুপি সেড়েছিলেন। এক ইন্টারভিউতে যখন প্রশ্ন করা হয় যে আপনি বিয়ে করে ফেলেছেন তখন উনি এ বিষয়ে কোন উত্তর দেননি। কিন্তু কিছু বছর পর অরিজিৎ নিজেই কিছু ছবি শেয়ার করে তা জানিয়ে দেন। অরিজিত সিং এর জীবনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় কন্ট্রোভার্সি হল, অরিজিতের সাথে সালমান খানের। সাল 2014 stargil অ্যাওয়ার্ডে সালমান খান ও রিতেশ দেশমুখ হোস্ট করছিলেন, যখন সময় আসে ২০১৪ সালের উইনার ঘোষণার, তখন অরিজিৎ সিং এর নাম ঘোষণা করা হয়, অরিজিৎ সিং এর স্টেজে আসতে কিছুটা সময় লেগে যায়, যার ফলে সালমান খান মজা করে বলেন - সো গ্যায়ে থে ক্যা ? তো এর জবাবে অরিজিৎ সিং বলেন - আপ লোগোনে সুলাদিয়া। তারপর সালমান খান বলেন- এয়সে গাওগে তো লোগ শোয়েঙ্গে হি না। এর সাথে সালমান খান তুম হি হো গানের একটি লাইনও বলেন,তো তো এরপর সবাইকে হাসতে থাকেন অরিজিত স্বয়ং নিজেও। সালমান খান অরিজিতকে বলেন গান গাওয়ার জন্য তো, অরিজিৎ একটি গানও করেন। গান শোনার পর সালমান খান বলেন, মাশাআল্লাহ আপ কি আওয়াজ ডিজারভিং হে, ইসিলিয়ে আপকো এ অ্যাওয়ার্ড মিলা এই পুরো কনভার্সেশনে এমন কোন কথা হয়নি বা কোন খারাপ কথা বলেনি অরিজিৎ , শুধু এটাই বলেছিলেন যে আপ লোগো নে সুলাদিয়া। আর হয়তো এই কারণেই সালমান খানের মনে হয়েছিল যে অরিজিতের এইরুপ ব্যবহার ঠিক হয়নি।যার ফলে সালমান খান নিজের ছবি থেকে অরিজিৎ সিং এর গান সরিয়ে দেন।
যদি এমনটা না হতো তাহলে অরিজিৎ সিংকে- প্রেম রতন ধন পাও, বাজরাঙ্গি ভাইজান ও কিক ছবিতে গান গাইতে দেখা যেত। কিন্তু সালমান খান ঠিক করে নিয়েছিলেন এখন থেকে সে তার ছবিতে আর অরিজিতকে গান গাওয়ার সুযোগ দেবেন না। ২০১৬ সালে সুলতান ছবির একটি গান- জাগে ঘুমেয়া গানটি গাওয়ার কথা ছিল অরিজিৎ সিং এর, কিন্তু সালমান খান এই ছবিতে অরিজিতের গান গাওয়ার জন্য সাপ মানা করে দেন। যদিও অরিজিৎ সিং এর সেই সময় গানের অভাব ছিল না তবুও ফেসবুক ও টুইটারে তিনি একটি পোস্ট করে লেখেন যে- ভাইজান ক্ষমা করে দিন, আমি আপনার ছোট ভাইয়ের মতো, হয়তো আমারই ভুল ছিল, প্লিজ ওই ছবি থেকে আমার গান বাদ দেবেন না। কিন্তু সালমান খান এর কোন উত্তর দেননি। আপনাদের কি মনে হয় ভুলটি ছিল কার অরিজিৎ সিং এর নাকি সালমান খানের?
পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মারা যাওয়ার পর সামনে এলো এমন এক তথ্য যা শুনে চমকে গিয়েছেন অনেকেই। ২৯ শে মে আন্ডোয়াল্ডের কিছু দুষ্কৃতী প্রকাশ্যে খুন করেন পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসে ওয়ালাকে। এরপরে জানা যায় আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর থেকে হুমকি ফোন পেয়েছেন অরিজিত সিংও। ২০১৫ সালে মুম্বাই আন্ডারওয়ার্ল্ডের তরফ থেকে ফোন আসে অরিজিতের ম্যানেজার তারসেনের কাছে। যে ডন ফোন করেন তার নাম রবি পূজারী। পাঁচ কোটি টাকার দাবি করা হয় অরিজিতের কাছ থেকে।শোনা যায় টাকা দিতে না পারায় অরিজিতকে বিনা পয়সায় শো করতে হয়েছে। অরিজিত নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানান- এক প্রোমোটারের তরফ থেকে তার ওপর চাপ আসতে থাকে। অনেক কম টাকার শো করতে বলছিলেন।সেই প্রোমোটারে যোগাযোগ ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন রবি পূজারীর সঙ্গে। সে আমার ম্যানেজারের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করছিল। আমি স্টুডিওয় থাকা কালীন ফোন ধরি না, তাই সে আমার ম্যানেজারের উপর প্রবল চাপ দেয়। ম্যানেজার ভয় পেয়ে আমাকে সব জানায়। আমরা পুলিশে অভিযোগ করি। অরিজিৎ আরো বলেন- আমি পূজারীকে চিনতাম না এবং আমার কাছে সোজাসুজি কোন ফোন আসেনি, আমাকে বলা হয় ফ্রিতে কয়েকটি শোয়ে গান গেয়ে দেওয়ার এবং আমার ম্যানেজার তা মানতে বাধ্য হয়। যদিও এই ঘটনার পর অরিজিৎ থানায় কোন এফআইআর করেননি শুধুমাত্র একটি ডায়েরি করে রেখেছিলেন।এমনিতেই শোনা যায় মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বহুদিনের যোগাযোগ আন্ডারওয়ার্ল্ডের।সঞ্জয় দত্ত থেকে মনিকা বেদী ও মমতা কুলকার্নি অনেকেরই নাম উঠে এসেছে এই তালিকায়।কোন কোন অপরাধে বলিউডের অভিনেতা, অভিনেত্রীরা জেল খেটেছিলেন,তা নিয়ে একটি ভিডিও এই চ্যানেলে আছে আপনারা এই ভিডিওর শেষে সেটি দেখে ও নিতে পারেন।
অরিজিতের যখন হামারি আধুরি কাহানি ছবির টাইটেল ট্র্যাক্টরি গাওয়ার সুযোগ আসে এবং রেকর্ডিং করতে রুমে যান তখন তিনি নার্ভাস ভীষন হয়ে পড়েন, এবং শুরুতেই গানটি রেকর্ড করার জন্য তিনি না করে দেন। কিন্তু ছবির ডাইরেক্টর মহেশ সুরী ও প্রডিউসার মহেশ ভাট অরিজিৎকে সাহস ও সাপোর্ট দেন, তখন অরিজিত এই গানটি রেকর্ড করেন। অরিজিত যখন( দাস কে দাস লে গায়ে দিল) শো জেতেন এবং যা প্রাইজ মানি পান তা থেকে লখন্ডওয়ালায় একটি রেকর্ডিং স্টুডিও বানান। এখানে তিনি মিউজিক কম্পোজ করতেন ও ছোট অ্যাডভার্টাইজমেন্টের জন্য মিউজিক দিতেন। অরিজিত সিং তেলেগু ছবি কেডিতে নিজের আওয়াজ দেন, ছবিতে (নিবে না নিবে না )নামের একটি গানও করেন। অরিজিৎ একটি এনজিও চালান যেখানে তিনি নিজের থেকে পয়সা ডোনেট করে দরিদ্রদের সাহায্য করেন। অরিজিৎ শুধু হিন্দি গান করেননি তিনি তেলেগু মারাঠি গুজরাটি ও বাঙলা ছবিতে গান করেছেন অরিজিৎ সিং একটি হিন্দি সিরিয়াল মধুবালা এক ইস্ক এক জুনুন -হাম হে দিবানে নামক গানটি গিয়েছিলেন। একটি বাংলা রিয়ালিটি শো দাদাগিরি টাইটেল সং টিও তিনি গেয়েছেন, যে শো টি হোস্ট করেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। একটি বাংলা ছবি ভালবাসার রোজনামচাতেও ডাইরেকশন করেছেন। অরিজিৎ সিং এত বড় সিঙ্গার হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজেকে সাধারণ মানুষ হিসেবে মেলে ধরেন,তার পোশাক আশাক ও অতি সাধারণ।কখন ও তিনি নজরে সেন কুর্তা পাঞ্জাবীতে,আবার কখনও হাওয়াই চটি পড়ে। অরিজিৎ বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে ছবার ফিল্ম অর আওয়ার্ড জয় করেছেন। অরিজিৎ এর ইন্টারভিউ দেওয়া, পার্টি করা এসব একদম পছন্দ নয়, ইন্টারভিউ দিতে নজরে এলেও, তাকে কখনোই কোনো পার্টি তে দেখা যায় নি। অরিজিতের শ্যোশাল মিডিয়ার থাকাও পছন্দ না, facebook twitter instagram এ তার অ্যাকাউন্ট থাকলেও ওনাকে একটিভ থাকতে খুব একটা দেখা যায় না। অরিজিৎ সিং এর নম্র শান্ত মুখ দেখে হয়তো বোঝা যায় না তিনি জীবনে কতটা সংঘর্ষ করেছেন। অরিজিৎ সিং এর জীবন সংঘর্ষ বহু মানুষের কাছে একটি অনুপ্রেরণা। জীবনে বড় হওয়ার চেষ্টা থাকলেই  কিন্তু চলার পথে অনেক বাধা আসবে,
কিন্তু সেই বাধা সম্মুখীন না হয়ে অনেকে হার মেনে নেন, তবুও কিছু লোক আছেন অরিজিৎ সিং এর মতনই যাদের সামনে মুশকিল হার মেনে নেয়। তো বন্ধুরা আজকের ভিডিও এতটাই, আপনি যদি অরিজিৎ সিং এর ফ্যান হয়ে থাকেন , তাহলে অবশ্যই আমাদের ফলো করুন।